তোমরা সত্যকে মিথ্যের সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না। @@ surah baqara ayat 42 Al Quran 2:42 @@
অবসরে সাকিব
অবসরে সাকিব

অবসরে সাকিব আল হাসান

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বৃহস্পতিবার এক বড় ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে অনুষ্ঠিতব্য হোম সিরিজের পর টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চান। তবে এই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে তার সেই সিরিজে অংশগ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের উপর। যদি নিরাপত্তা জনিত কারণে তিনি সেই ম্যাচে অংশ নিতে না পারেন, তাহলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে আসন্ন দ্বিতীয় টেস্টই তার শেষ টেস্ট ম্যাচ হতে পারে।

সাকিব কানপুরে ভারত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের আগে সাংবাদিকদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন,

“এটা আমার ইচ্ছা (অবসর নেওয়ার), এবং আমি এটি বিসিবি এবং নির্বাচকদের সাথে শেয়ার করেছি। তারা আমার সাথে একমত হয়েছে এবং আমি চাই মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলতে পারি। যদি সেই ম্যাচে খেলা সম্ভব না হয়, তবে ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টই আমার শেষ ম্যাচ হবে।”

টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা

টেস্ট থেকে অবসরের পাশাপাশি সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণাও দিয়েছেন। তিনি বলেন,

“আমি মনে করি, বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচই আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিলো। বিসিবি এবং নির্বাচকদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমি মনে করি, ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নতুন খেলোয়াড়দের জায়গা দেওয়ার, এটাই সঠিক সময়। আশা করি, বিসিবি যোগ্য খেলোয়াড় খুঁজে পাবে এবং ২০২৬ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করবে।”

অবসরের সিদ্ধান্তে নিরাপত্তা ঝুঁকি

সাকিবের অবসর নেওয়ার পেছনে তার নিরাপত্তার বিষয়টিও বড় ভূমিকা পালন করছে। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত। গত ৫ ই আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। সাকিব বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের অংশ ছিলেন, যা তাকে বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। তিনি জানান, তিনি বিসিবির সাথে আলোচনা করছেন যাতে তিনি নিরাপদে দেশে ফিরে টেস্ট সিরিজের ম্যাচগুলো খেলতে পারেন।

টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সাকিবের অবদান

সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক অনন্য নাম। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি বাংলাদেশের এবং বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে অসাধারণ পারফর্ম করে আসছেন। ব্যাট এবং বল হাতে তার পারদর্শিতা বাংলাদেশকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিজয় এনে দিয়েছে। ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেকের পর থেকে তিনি দলের অন্যতম আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে ৬০০০-এর বেশি রান এবং ২০০-এর বেশি উইকেট নিয়ে সাকিব বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা পারফর্মারদের মধ্যে অন্যতম।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও সাকিব ছিলেন বাংলাদেশের বড় শক্তি। ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং তিন ফর্মেই তার অবদান অসাধারণ। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৯ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপসহ আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার পারফরম্যান্স স্মরণীয়। সাকিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। তাই তার অবসর বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি বড় শূন্যতা তৈরি করবে।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ

সাকিবের অবসর বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য এক বড় ধাক্কা হলেও তিনি নিজেই আশাবাদী যে দেশের তরুণ খেলোয়াড়রা তার জায়গা পূরণ করতে পারবে। বিসিবি নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করবে এবং ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শক্তিশালী দল নিয়ে মাঠে নামবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তরুণ প্রতিভার বিকাশ এবং অভিজ্ঞতার সঠিক মিশ্রণ থাকলে বাংলাদেশ ক্রিকেট আরও সমৃদ্ধ হবে।

One thought on “

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *