শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ওসি আল-আমিনের (৪৫) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে দুপুরে । এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিনি কোনো হতাশার মধ্যে ছিলেন না এবং পরিবার নিয়ে সুখেই তিনি জীবনযাপন করছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাজিরা থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ওসি আল-আমিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, দুপুর ১টার দিকে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়।
পুলিশের ভাষ্য: হতাশায় ভুগছিলেন
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ শরীফ উজ জামান সাংবাদিকদের জানান, “ওসি আল-আমিন তাঁর কার্যালয়ে যাননি। বেলা ১১টার মধ্যে তাঁর সঙ্গে থানার সদস্যদের ফোনে যোগাযোগ হয়েছিল। দুপুরে তাঁকে তাঁর কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। কক্ষে হতাশা কাটানোর জন্য ব্যবহৃত ওষুধ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পেছনে হতাশার ভূমিকা থাকতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত ও তদন্তের মাধ্যমে সঠিক কারণ উদঘাটন করা হবে।
জাজিরা থানার ওসি আল–আমিন এর হতাশার কোনো তথ্য নেই: পরিবারের বক্তব্য
ওসি আল-আমিনের পরিবারের সদস্যরা তাঁর হতাশার কথা জানতেন না। তাঁর স্ত্রী শরীফুন্নেছা বলেন, “আমরা জানতাম না যে তিনি কোনো হতাশায় ছিলেন। পরিবার নিয়ে সুখেই ছিলেন। কয়েক দিন আগেই আমরা জাজিরায় বেড়িয়ে এসেছি।”
ঘটনার বিবরণ
জাজিরা থানার এক কনস্টেবল দুপুর ১১টায় তাঁকে জরুরি নথিতে স্বাক্ষর দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি পরে করবেন বলে জানান। দুপুর সোয়া ১টার দিকে তদন্ত কর্মকর্তা আবদুস সালাম তাঁর কক্ষে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ দেখতে পান।
সিআইডি পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ নামিয়ে এনে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। সন্ধ্যায় মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঠিক কারণ জানতে সিআইডি এবং ফরেনসিক টিম তদন্ত করছে। পরিবারের দাবি এবং পুলিশের প্রাথমিক ধারণার মধ্যে পার্থক্য থাকায় বিষয়টি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠছে। আরো জানুনঃ কুমিল্লায় প্রেমিক, প্রেমিকা ভিডিও কলে একসাথে আত্মহত্যা
ওসি আল–আমিনের ব্যক্তিগত জীবন
বরিশালের মুলাদি উপজেলার কাচিচর গ্রামের সন্তান আল-আমিন ২০০৭ সালে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। গত বছর জাজিরা থানায় বদলি হয়ে আসেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। মেয়েরা ভিকারুননিসা নূন স্কুলে পড়াশোনা করে।