ইন্টারপোল, বা আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা, প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অপরাধীদের ধরতে ইন্টারপোল রেড লিস্ট প্রকাশ করে। এই রেড লিস্টে এমন অপরাধীদের নাম থাকে যারা আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে পালিয়ে গেছে। সম্প্রতি ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫ প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে ৬৩ বাংলাদেশি সহ বিভিন্ন দেশের অপরাধীদের খোঁজ চলছে। আজকে আমরা জানব, ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫-এ কোন ৬৩ বাংলাদেশি অপরাধীর নাম রয়েছে।
ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫
ইন্টারপোল রেড লিস্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ তালিকা যা আন্তর্জাতিক পুলিশি সহযোগিতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এই তালিকায় এমন অপরাধীদের নাম থাকে যারা বিভিন্ন দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পলাতক এবং তারা অপরাধ করে অন্য দেশে চলে গেছে। ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫-এ নাম থাকা অপরাধীদের ধরতে ইন্টারপোল তার সদস্য দেশগুলির সাথে সহযোগিতা করে। আরো জানুন: বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি কে? ফোর্বসের ২০২৪ সালের সর্বশেষ তালিকা
ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫-এ বাংলাদেশের ৬৩ অপরাধী
প্রকাশিত হওয়া রেড লিস্ট ২০২৫ এ, ৬৩ জন বাংলাদেশিকে খুঁজছে ইন্টারপোল। এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে খুন, যৌন নির্যাতন, মুদ্রা জালিয়াতি, চোরাচালানি এবং মানবপাচার।
1. খুন (Murder)
- খোরশেদ আলম – বেলজিয়াম
- মোহাম্মদ মিলন – ইস্তাওয়ানি, আফ্রিকা
- লিটন ব্যাপারী – ইস্তাওয়ানি, আফ্রিকা
- মিজান মিয়া – দক্ষিণ আফ্রিকা
- রাজু ঢালী – সিঙ্গাপুর
- নুরুল – গাজীপুর
- মজনু – গাজীপুর
- খন্দকার আব্দুর রশীদ – কুমিল্লা
- রাশেদ চৌধুরী – কুমিল্লা
- নুর চৌধুরী – ঢাকা
- নবী হোসাইন – ঢাকা
- তানভীর ইসলাম জয় – ঢাকা
- রবিউল ইসলাম – বাগেরহাট
- মোহাম্মদ তাজউদ্দীন – টাঙ্গাইল
- বাবু আহমেদ রাতুল – টাঙ্গাইল
- ইউসুফ – চট্টগ্রাম
- সাজ্জাদ হোসেন – চট্টগ্রাম
- নাইম খান – ফরিদপুর
- নাজমুল আনসার – ফরিদপুর
- শরীফুল হক ডালিম – ফরিদপুর
- শরীফুল হোসাইন – খুলনা
- কালা জাহাঙ্গীর – বগুড়া
- জিসান আহমেদ – বগুড়া
- তৌফিক আলম – বগুড়া
- জাফর আহমেদ – বগুড়া
- সালাউদ্দিন মিন্টু – চট্টগ্রাম
- আমিনুর রসুল – চট্টগ্রাম
- আবদুল জাব্বার – নেত্রকোনা
- গোলাম ফারুক অভি – বরিশাল
- সুব্রত বাইন – বরিশাল
- রফিকুল ইসলাম – মুন্সীগঞ্জ
- হারুন শেখ – খুলনা
- সুলতান – খুলনা
- মোসলেম উদ্দিন খান – নরসিংদী
- চন্দন কুমার রায় – গাইবান্ধা
- জাহিদ হোসেন খোকন – গাইবান্ধা
- সৈয়দ মো. হাছান আলী – গাইবান্ধা
- আবুল কালাম আজাদ – গাইবান্ধা
- আব্দুল জব্বার – গাইবান্ধা
- সৈয়দ মো. হোসেন – গাইবান্ধা
2. মুদ্রা জালিয়াতি (Currency Counterfeiting)
- আজিজুর রহমান – ভারত
- অজয় বিশ্বাস – ভারত
- তরিকুল ইসলাম – ভারত
- সবুজ – ভারত
- আবদুল আলীম শরীফ – ভারত
- মনির ভুইয়া – ভারত
- শফিকুল – ভারত
3. চোরাচালানি (Smuggling)
- সিরাজ মোস্তফা – মালয়েশিয়া
4. প্রতারণা (Fraud)
- হানিফ – মালদ্বীপ
5. যৌন নির্যাতন (Sexual Assault)
- জাহিদুল ইসলাম – যুক্তরাষ্ট্র
6. অস্ত্র মামলা (Weapon Case)
- ফজলুল আমীন জাভেদ – যুক্তরাষ্ট্র
- গিয়াস উদ্দিন – বাংলাদেশ
7. মানবপাচার (Human Trafficking)
- জাফর ইকবাল – কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ
- স্বপন – কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ
- মিন্টু মিয়া – কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ
- তানজীরুল – কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ
- মোল্লা নজরুল ইসলাম – মাদারীপুর, বাংলাদেশ
8. পর্নোগ্রাফি (Pornography)
- ওয়াসিম – টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ
9. নির্যাতন (Torture)
- অশোক কুমার দাশ – চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
10. জালিয়াতি (Forgery)
- জামালপুরের আমানুল্লাহ – জামালপুর, বাংলাদেশ
- আতাউর রহমান – বাংলাদেশ
কীভাবে ইন্টারপোল রেড লিস্ট কাজ করে?
ইন্টারপোল রেড লিস্ট একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তালিকা যা সদস্য দেশগুলিকে তাদের অপরাধী ধরতে সাহায্য করে। যখন একটি দেশ একটি অপরাধীকে ধরে আরেক দেশে পাঠাতে চায়, তখন তারা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড লিস্টের আবেদন করে। এতে প্রতিটি সদস্য দেশ অপরাধী ধরতে আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা করে।
ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫ এর ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশে তার প্রভাব
যেহেতু ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অপরাধীদের নাম উঠে এসেছে, এটি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই তালিকায় থাকা অপরাধীদের ধরতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। এতে শুধুমাত্র অপরাধী গ্রেফতার হবে না, বরং বিশ্বব্যাপী অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণও সম্ভব হবে।
ইন্টারপোল রেড লিস্টে থাকা অপরাধীদের প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?
বাংলাদেশে ইন্টারপোল রেড লিস্টে থাকা অপরাধীদের ধরতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা এবং অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫-এ নতুন পরিবর্তন
ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫-এ নতুনভাবে আরো অপরাধীর নাম যোগ করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক পুলিশি ব্যবস্থা ও অপরাধ দমন ব্যবস্থা আরও উন্নত করবে। এটি অন্য দেশগুলির জন্যও একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা তাদের অপরাধীদের সীমান্ত অতিক্রম করতে না দেয়।
শেষ কথা
ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা বিশ্বব্যাপী অপরাধী দমনে সহায়তা করে। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ, যেখানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সহায়ক হবে। ইন্টারপোল তার রেড লিস্টের মাধ্যমে অপরাধী গ্রেফতার করতে দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক।
FAQ (PAA)
১. ইন্টারপোল রেড লিস্ট কি? ইন্টারপোল রেড লিস্ট এমন অপরাধীদের তালিকা যারা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গিয়ে অপরাধ করেছে এবং তাদের ধরতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
২. ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫ এ কী পরিবর্তন হয়েছে? ইন্টারপোল রেড লিস্ট ২০২৫-এ নতুন অপরাধীদের নাম যোগ করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
৩. ইন্টারপোল রেড লিস্টে থাকা অপরাধীকে কিভাবে গ্রেফতার করা হয়? ইন্টারপোল রেড লিস্টে থাকা অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সংশ্লিষ্ট দেশ ইন্টারপোলের মাধ্যমে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করে এবং অপরাধীর বিষয়ে সব তথ্য প্রদান করে।
৪. ইন্টারপোল রেড লিস্টে থাকা অপরাধীরা কোথায় পালিয়ে থাকতে পারে? ইন্টারপোল রেড লিস্টে থাকা অপরাধীরা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকতে পারে, এবং তাদের ধরতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।