বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা আইনজীবী এবং সাবেক উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ আর নেই। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এই বেদনাদায়ক খবরটি ঢাকায় পৌঁছানোর পরপরই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দ্রুত ল্যাবএইড হাসপাতালে ছুটে যান।
উপদেষ্টা হাসান আরিফ কে ছিলেন?
এ এফ হাসান আরিফ ছিলেন একজন উজ্জ্বল আইনজীবী এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি ও বেসামরিক বিমান চলাচল এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তার কর্মজীবন অনেক বর্ণাঢ্য এবং বৈচিত্র্যময়। তিনি ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা তার শোকবার্তায় উল্লেখ করেন,
“উপদেষ্টা হাসান আরিফ ছিলেন একজন শীর্ষ আইনজীবী, যিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।”
হাসান আরিফের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া কী?
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,
“তিনি আমাদের সমাজের প্রান্তিক মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় অসাধারণ অবদান রেখেছেন। একজন আইনজীবী হিসেবে তিনি তার নৈতিকতা, সক্রিয়তা এবং ভিন্নমতাবলম্বী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”
শুক্রবার বিকালে দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পরপরই প্রধান উপদেষ্টা তার মৃত্যুর খবর পান। তিনি বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ল্যাবএইড হাসপাতালে ছুটে যান।
এ এফ হাসান আরিফ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
১৯৪১ সালে ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন এ এফ হাসান আরিফ। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবনের সূচনা ঘটে। পরে তিনি ঢাকায় ফিরে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন। আইন এবং বিচার ব্যবস্থায় তার পেশাগত জীবনের অবদান তাকে দেশের সেরা আইনজীবীদের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
হাসান আরিফের জানাজার সময় ও স্থান কোথায়?
তার প্রথম নামাজে জানাজা শুক্রবার বাদ এশা ধানমন্ডির সাত নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় জানাজা শনিবার বেলা ১১টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মজীবনে সাফল্য ও সামাজিক অবদান
উপদেষ্টা হাসান আরিফ তার দক্ষতা এবং সততার জন্য সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। তিনি ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার আইনি সক্রিয়তা এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছে।
তার মৃত্যুতে দেশব্যাপী শোক
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তার সহকর্মীরা, শিক্ষার্থীরা এবং সাধারণ মানুষ সবাই তার অবদান এবং তার কর্মজীবনের জন্য তাকে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
উপসংহার
উপদেষ্টা হাসান আরিফ ছিলেন একজন প্রতিভাবান আইনজীবী এবং একজন দেশপ্রেমিক। তার কর্মজীবন এবং সামাজিক অবদান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। তার মৃত্যুতে দেশ একজন যোগ্য এবং সৎ নেতৃত্ব হারিয়েছে।
কিওয়ার্ড : হাসান আরিফ, উপদেষ্টা হাসান আরিফ, হাসান আরিফ উপদেষ্টা, এ এফ হাসান আরিফ