২৮ ডিসেম্বর, শনিবার
কুমিল্লা-৩ আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য কায়কোবাদ এমপি, যিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, দীর্ঘ ১৩ বছর প্রবাসে থাকার পর আজ দেশে ফিরছেন। তার এই প্রত্যাবর্তন কুমিল্লার মুরাদনগরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ, ১৯৫৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন জাতীয় পার্টির ব্যানারে এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হন। ২০০১ এবং ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কুমিল্লা-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
কায়কোবাদ এমপি’র যাবজ্জীবন কারাদন্ড
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার গ্রেনেড হামলার মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০১৮ সালে এই মামলায় কায়কোবাদ এমপিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলা এবং রায়ের পর থেকে তিনি ২০১৪ সালে থাইল্যান্ড এবং পরে দুবাইয়ে প্রবাসে অবস্থান করছিলেন।
দেশে ফেরার আয়োজন
কায়কোবাদ এমপির দেশে ফেরা উপলক্ষে মুরাদনগরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন আয়োজন চলছে। ২৮ ডিসেম্বর, শনিবার বেলা ১১টায় সৌদি আরব থেকে একটি ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। তাকে স্বাগত জানাতে উপজেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। আরো জানুন: উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়া যাচ্ছেন বিদেশ
কায়কোবাদ এমপির প্রত্যাবর্তন
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন,
“কায়কোবাদ এমপির স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রত্যাবর্তন বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে নতুন গতিশীলতা আনতে পারে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
অতিরিক্ত মানুষের সমাগমের কারণে বিমানবন্দর এলাকায় যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগের সহযোগিতার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কায়কোবাদ এমপির দেশে ফেরা বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। তার জনপ্রিয়তা এবং প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা বিএনপির ভবিষ্যৎ কৌশলে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন হারুন রশিদ বলেন,
“২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে কাজী কায়কোবাদের নাম যুক্ত করা হয়েছিল, তবে সত্য কখনো চাপা থাকে না। উচ্চ আদালত এই মামলায় কায়কোবাদসহ বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে নির্দোষ প্রমাণ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের মামলা ও ষড়যন্ত্র শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই করা হয়েছিল। জনগণ এর সঠিক বিচার করবে এবং সত্যিকার ইতিহাস জানবে।”
উপসংহার
দীর্ঘ ১৩ বছরের প্রবাস জীবন শেষে কায়কোবাদ এমপির দেশে ফেরা কুমিল্লার মুরাদনগরের জনগণের জন্যও একটি স্মরণীয় দিন। তার এই প্রত্যাবর্তন রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোর সঞ্চার করতে পারে।
FAQs
১. কায়কোবাদ এমপি কে?
তিনি কুমিল্লা-৩ আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।
২. কেন তিনি প্রবাসে ছিলেন?
২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর তিনি প্রবাসে অবস্থান করছিলেন।
৩. কায়কোবাদ এমপি কবে দেশে ফিরছেন?
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার, বেলা ১১টায় তিনি দেশে ফিরছেন।