পেনশন সুবিধা পাবে নাতি-নাতনিও
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পেনশন নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সরকারি চাকরিজীবীর স্বামী বা স্ত্রী এবং পুত্র-কন্যা জীবিত না থাকলে, অথবা ছেলের বয়স ২৫ বছরের বেশি হলে, তার মৃত ছেলে বা মেয়ের সন্তানরা, অর্থাৎ নাতি-নাতনি—এবং তৃতীয় লিঙ্গের নাতি-নাতনিরাও এই পেনশন সুবিধা পাবেন।
এই সংশোধনী কার্যকর হওয়ার ফলে সরকারি চাকরিজীবীরা তাদের পরিবারের জন্য আরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবের মৃত্যুর পর পেনশন ও গ্রাচুইটি সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সরকার ‘পেনশন রুলস এন্ড রিটায়ারমেন্ট বেনিফিটস’ সংশোধন করেছে।
নতুন নিয়মের বিস্তারিত:
সরকারি চাকরিজীবী যদি পেনশনের নমিনি বা উত্তরাধিকারী হিসেবে কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে যান, তবে তার পরিবারের সকলে সমানভাবে এই আনুতোষিক সুবিধা পাবেন। তবে, এই সুবিধা ভোগের জন্য নাতি-নাতনির বয়স ১৮ বছরের কম হতে হবে। পাশাপাশি, যদি মৃত ছেলের বিবাহিত বোন বা এমন কোনো বোন থাকেন যাদের স্বামী জীবিত, তাদের জন্য এই সুবিধা প্রযোজ্য নয়।
প্রেক্ষাপট:
সাবেক অতিরিক্ত সচিব সানজিদা সোবহানের মৃত্যুর পর পেনশন সুবিধা নিয়ে পরিবারের মধ্যে আইনী জটিলতার সৃষ্টি হয়। এই জটিলতা কাটাতে অর্থ মন্ত্রণালয় ‘পেনশন রুলস এন্ড রিটায়ারমেন্ট বেনিফিটস’ সংশোধন করে মৃত ছেলে বা মেয়ের সন্তানদেরও পরিবার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এখন থেকে পেনশন সুবিধার আওতায় নাতি-নাতনিরাও তাদের প্রাপ্য অংশের পেনশন সুবিধা পাবেন।
নতুন নিয়মে পরিবারের সংজ্ঞা বিস্তৃত:
সংশোধনীতে পরিবারের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে মৃত সন্তানের সন্তানরাও (নাতি-নাতনি ও তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা) এখন পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা পাবেন। আগে যেখানে ছেলের বয়স ২৫ বছরের বেশি হলে বা কন্যা বিবাহিত হলে তারা পেনশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেন, সেখানে এই সংশোধনের ফলে সরকারি চাকরিজীবীদের পরিবারে আর্থিক সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হলো।
ফ্যামিলি পেনশন নিয়মের মেয়াদ:
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, পারিবারিক পেনশন ন্যূনতম ১৫ বছরের জন্য প্রদান করা হয়। কিন্তু এই সংশোধনীর মাধ্যমে চাকরিজীবীর মৃত্যুর পর সন্তানদের বয়স সীমার শর্তটি সহজ করা হয়েছে, যাতে পরিবারটি আর্থিক সুরক্ষায় থাকতে পারে।
আরো পরুন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল কার্যক্রম আইনি হিসেবে গণ্য হবে