তোমরা সত্যকে মিথ্যের সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না। @@ surah baqara ayat 42 Al Quran 2:42 @@

নাবিক হওয়ার শেষ সুযোগ; বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়োগ ২০২৫

বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়োগ ২০২৫
বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়োগ ২০২৫

দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়োগ ২০২৫ এর সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর বিভিন্ন পদে নতুন নিয়োগের মাধ্যমে দেশের তরুণদের একটি বড় সুযোগ দেয় এই বাহিনী।  এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কীভাবে আপনি এই নিয়োগে আবেদন করতে পারেন, কাদের জন্য কী ধরনের পদ রয়েছে এবং কী কী যোগ্যতা লাগবে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়োগ ২০২৫ সম্পর্কে সংক্ষেপে

২০২৫ সালের নিয়োগ সার্কুলার ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে (joinnavy.navy.mil.bd)। এতে বলা হয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরির নিয়োগের কথা, যেমন: নাবিক (Sailor), এমওডিসি (MODC – Navy), টেকনিক্যাল শাখা, বেসামরিক পদ প্রত্যেক ক্যাটাগরির জন্য আলাদা শর্ত ও আবেদন প্রক্রিয়া আছে, যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে।

নাবিক ও এমওডিসি নিয়োগ (প্রধান আকর্ষণ)

নাবিক ও এমওডিসি পদগুলো তরুণদের জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। চলুন দেখি এই পদে আবেদনের জন্য কী লাগবে।

 নাবিক হওয়ার জন্য যোগ্যতা:

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি/সমমান (সাইন্সে ভালো গ্রেড থাকা আবশ্যক)
  • বয়স: ১৭ থেকে ২০ বছর (১ জানুয়ারি ২০২৫ অনুযায়ী)
  • উচ্চতা: কমপক্ষে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি
  • দৃষ্টি শক্তি: ভালো হতে হবে (৬/৬)
  • শারীরিক ফিটনেস: পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে

যোগ্যতা (MODC):

    • শিক্ষাগত যোগ্যতা:কমপক্ষে ৮ম শ্রেণি
    • বয়স: ১৭ থেকে ২২ বছর
    • উচ্চতা ও শারীরিক মাপ: নির্দিষ্ট মাপ অনুযায়ী হতে হবে

টেকনিক্যাল শাখা: ভবিষ্যতের প্রযুক্তিবিদদের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২০২৫ সালে টেকনিক্যাল পদে নতুন সদস্য নিয়োগ দিচ্ছে। এ বিভাগে কাজ করতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা একটু বেশি লাগে এবং কিছু স্পেশাল স্কিলও দরকার হয়। বিস্তারিত

নৌবাহিনীতে টেকনিক্যাল শাখায় আবেদনের যোগ্যতা:

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি বা এইচএসসি (সায়েন্স বিভাগে GPA ভালো হতে হবে)
  • কারিগরি শিক্ষা বা ডিপ্লোমা: কোনো ক্ষেত্রে পয়েন্ট হিসেবে বাড়তি সুবিধা মিলতে পারে
  • বয়সসীমা: সাধারণত ১৭ থেকে ২১ বছর এখানে আপনি জাহাজের ইঞ্জিন, কমিউনিকেশন, রাডার ও প্রযুক্তি বিষয়ক নানা কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

নৌবাহিনীতে বেসামরিক পদে যোগদান:

যারা সরাসরি বাহিনীতে না গিয়েও অবদান রাখতে চান সবাই হয়তো সরাসরি নাবিক বা অফিসার হতে চায় না। কেউ কেউ পছন্দ করেন অফিস সহকারি, ড্রাইভার, স্টাফ বা প্রশাসনিক কাজ। এজন্য রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী বেসামরিক পদ। যেমন: অফিস সহকারী, হিসাবরক্ষক ,টেকনিশিয়ান, গাড়িচালক, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট এই পদগুলোতে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স এবং দক্ষতার ভিত্তিতে আবেদন নেওয়া হয়। তবে আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং মেডিকেল-ফিট থাকতে হবে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগদান
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগদান

নৌবাহিনীতে আবেদন যেভাবে করবেন

আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করলেই আপনি আবেদন করতে পারবেন:

1. ওয়েবসাইটে যান: joinnavy.navy.mil.bd
2. সার্কুলার পড়ুন: নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে কোন পদে আবেদন করবেন তা ঠিক করুন
3. অনলাইন ফর্ম পূরণ করুন
4. ফি জমা দিন (যদি থাকে)
5. ফর্ম সাবমিট করুন এবং প্রিন্ট কপি রেখে দিন

📝 আবেদনের সময় অবশ্যই সঠিক তথ্য দিন। ভুল তথ্য দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে।

✅ আপনি কি যোগ্য?

👉 উপরের সবগুলো উত্তর “হ্যাঁ” হলে আপনি আবেদন করতে পারবেন।

লিখিত ও শারীরিক পরীক্ষা

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চাকরিতে যোগ দিতে হলে শুধু আবেদন করলেই হবে না—প্রতিযোগিতা করে উত্তীর্ণ হতে হবে কয়েকটি ধাপের পরীক্ষায়।

লিখিত পরীক্ষা

সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন আসে। এতে বহু নির্বাচনী (MCQ)ও কিছু ক্ষেত্রে লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেয়া লাগে। পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা (বিভিন্ন পদে ভিন্ন হতে পারে) এবং ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটা যেতে পারে।

শারীরিক পরীক্ষা:

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা দিতে হয়।

  • দৌড় – নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব
  • পুশ-আপ, সিট-আপ
  • উচ্চতা ও ওজন পরীক্ষা
  • চোখ ও কানের পরীক্ষা
  • মেডিকেল চেকআপ এই ধাপে অনেক প্রার্থী বাদ পড়ে, তাই আবেদন করার আগেই ফিটনেস বাড়িয়ে নেওয়া ভালো।

মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা)

শারীরিক পরীক্ষার পর থাকে মৌখিক পরীক্ষা বা ভাইভা-ভ্যাস। এখানে আপনার বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্বাস, সাধারণ জ্ঞান, পরিবার ও দেশের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই করা হয়। এখানে সাধারণ কিছু প্রশ্ন যেমন:

  1. তুমি কেন নৌবাহিনীতে যোগ দিতে চাও?
  2. তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
  3. দেশের কোন কোন বিষয় তোমাকে প্রেরণা দেয়?

ভাইভা বোর্ডে সাধারণত সিনিয়র অফিসাররা থাকেন। আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী থাকেন ও স্পষ্টভাবে কথা বলেন, তাহলে পাশ করার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

নৌবাহিনীর রেজাল্ট কবে এবং কোথায় পাবেন?

নৌবাহিনীর রেজাল্ট সাধারণত এখানে প্রকাশ করা হয়। প্রথমে লিখিত পরীক্ষার রেজাল্ট, তারপর শারীরিক ও ভাইভা শেষে ফাইনাল রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়। ফলাফল প্রকাশের সময় অনলাইনে প্রচুর ভিজিটর থাকায় ওয়েবসাইট স্লো হতে পারে।

নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ

নিয়োগের পর নির্বাচিত প্রার্থীদের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়। প্রশিক্ষণকালীন সময়েও খাওয়া, থাকা, পোশাক, চিকিৎসা এবং সম্মানজনক ভাতা প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণের শেষে যারা সফলভাবে শেষ করতে পারেন, তারা স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নিয়োগ পান

📞 বাংলাদেশ নৌবাহিনী অফিসিয়ালি যোগাযোগ এর ঠিকানা

ফোন (ল্যান্ডলাইন): 09613-462215

ফোন (মোবাইল): +880-176-970-2215

ইমেইল: dps@navy.mil.bd

ঠিকানা: নেভাল হেডকোয়ার্টার, বনানী, ঢাকা-১২১৩

প্রশিক্ষণে শেখানো হয়:

  • সামরিক শৃঙ্খলা
  • অস্ত্রচালনা ও নিরাপত্তা
  • প্রযুক্তি ও জাহাজ পরিচালনা
  • মানসিক ও শারীরিক দৃঢ়তা

আবেদন করার আগে ভালোভাবে সার্কুলার পড়ুন, যোগ্যতা মিলছে কিনা নিশ্চিত হোন, প্রিন্টেড কপি রাখুন। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রতিদিন ৩০ মিনিট দৌড়ান, সাধারণ জ্ঞান ও গণিত চর্চা করুন পাশাপাশি ইংরেজি শেখার চেষ্টা করুন, নৌবাহিনী সম্পর্কে পড়ুন ও জানুন

 

বাংলাদেশ নৌবাহিনী শুধু একটি চাকরির জায়গা নয় – এটি একটি সেবা, সম্মান এবং দেশপ্রেমের প্রতীক। যারা শৃঙ্খলা, সাহস ও দেশকে ভালোবাসেন – তাদের জন্য এটি হতে পারে জীবনের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত।

প্রশ্নোত্তর (FAQ)

বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নাবিক পদে সর্বোচ্চ বয়স কত?

নাবিক পদে আবেদনকারীর সর্বোচ্চ বয়স সাধারণত ২০ বছর হয়ে থাকে।

নাবিক পদে আবেদন করার জন্য ন্যূনতম উচ্চতা কত লাগে?

সাধারণত ন্যূনতম উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি প্রয়োজন হয়।

নৌবাহিনীতে মহিলা প্রার্থী কি আবেদন করতে পারে?

নির্দিষ্ট পদে নারী প্রার্থীদের জন্য সুযোগ থাকলে সার্কুলারে উল্লেখ থাকে।

নৌবাহিনী নাবিক পদে কি চোখের সমস্যা থাকলে আবেদন করা যাবে?

না, চোখের দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ হতে হবে। চশমা বা লেন্স গ্রহণযোগ্য নয়।

নাবিক পদে প্রশিক্ষণ কতদিনের হয়?

সাধারণত ২৪ সপ্তাহের মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

নাবিক পদে আবেদন ফি কত?

প্রায় ২০০ টাকা, যা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

নৌবাহিনীতে নাবিক ও এমওডিসি পদে কী পার্থক্য?

নাবিক মূলত সামরিক দায়িত্ব পালন করে, আর এমওডিসি হল মেডিকেল সহকারী।

নাবিক পদে ট্রেনিং কোথায় হয়?

সাধারণত চট্টগ্রাম ও খুলনায় নৌবাহিনীর ট্রেনিং সেন্টারে হয়।

নৌবাহিনী নিয়োগে কোন মেডিকেল টেস্ট নেওয়া হয়?

শারীরিক ফিটনেস, চোখ, কানে শোনা, রক্তচাপসহ বিভিন্ন মেডিকেল টেস্ট হয়।

নাবিক আবেদন করার পর কবে পরীক্ষা হয়?

আবেদন প্রক্রিয়া শেষে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হয়।

নাবিক পদে ভর্তি হলে বেতন কত?

প্রশিক্ষণকালে ভাতা এবং পরে ৯ম গ্রেড অনুযায়ী বেতন দেওয়া হয়।

টেকনিক্যাল শাখায় নাবিক হতে হলে কী যোগ্যতা প্রয়োজন?

সাধারণত বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ ও নির্দিষ্ট জিপিএ প্রয়োজন।

নাবিক নিয়োগে কোন কোন ট্রেড থাকে?

সিগন্যাল, ইঞ্জিন, টেকনিক্যাল, স্টোর, মেডিকেলসহ একাধিক ট্রেড থাকে।

নাবিক পদে আবেদন কোথায় জমা দিতে হয়?

অনলাইনে আবেদন করতে হয়: www.joinnavy.navy.mil.bd

নাবিক হতে আবেদন করলে কি প্রিন্ট কপি জমা দিতে হয়?

হ্যাঁ, আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি, ছবি ও অন্যান্য কাগজপত্র পরীক্ষার সময় জমা দিতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!