ফ্রান্সের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ার (Michale Barnier) অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) তিনি তার পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। এই ঘটনা ফ্রান্সের আধুনিক গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। ১৯৬২ সালের পর প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী আস্থা ভোটে পরাজিত হলেন।
মিশেল বার্নিয়ার (Michale Barnier) কেন পদত্যাগ করলেন?
১. বাজেট পাস নিয়ে বিতর্ক
মিশেল বার্নিয়ার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন ছাড়াই বাজেট পাস করার জন্য বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করেন। এই বাজেটে ৬০ বিলিয়ন ইউরো সঞ্চয়ের প্রস্তাব ছিল, যা ঘাটতি কমানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল। তবে এই পদক্ষেপ বাম এবং ডানপন্থি দলগুলোর ক্ষোভ বাড়িয়ে দেয়।
২. অনাস্থা ভোটের কারণ
এই ক্ষোভ থেকেই বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সংসদে তার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনা হয়। ডানপন্থি এবং বামপন্থি দলগুলো একত্রিত হয়ে তার সরকারের পতনের পক্ষে ভোট দেন।
মিশেল বার্নিয়ার (Michale Barnier) পদত্যাগের রাজনৈতিক প্রভাব
১. ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর প্রভাব
বার্নিয়ারের পদত্যাগ এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তম দেশগুলো রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফ্রান্সের এই অস্থিরতা ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তি আরও দুর্বল করতে পারে।
২. এমানুয়েল মাক্রোঁর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ এবং একটি কার্যকর সরকার গঠনের পাশাপাশি তাকে বিভক্ত সংসদে শাসনব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখতে হবে। এর মধ্যে বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যেই তার পদত্যাগের দাবি তুলেছে।
মিশেল বার্নিয়ার (Michale Barnier) বিদায়ী মন্তব্য কী বলছে?
অনাস্থা ভোটে পরাজয়ের পর মিশেল বার্নিয়ার (Michale Barnier) বলেন,
“সম্মানের সঙ্গে ফ্রান্সের জনগণের সেবা করতে পারাটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। তবে এই অনাস্থা ফ্রান্সের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।”
বার্নিয়ারের বক্তব্য তার সময়ের কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে।
ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে?
মাক্রোঁর সামনে আসন্ন চ্যালেঞ্জ
- একজন কার্যকর প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা।
- বিভক্ত সংসদে সমন্বয় রেখে কাজ করা।
- নতুন সংসদীয় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত (জুলাই ২০২৫) স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্সে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা মাক্রোঁর জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
আপনার মতামত দিন
আপনার মতে, মিশেল বার্নিয়ার (Michale Barnier) পদত্যাগ ফ্রান্সের জন্য ইতিবাচক না নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে? আমাদের জানাতে নিচে কমেন্ট করুন।
বিশ্ব রাজনীতির সঠিক বিশ্লেষণ ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। আরো জানুন: ইসকন ভারত: বেনাপোল থেকে ফেরত গেল ৫৪ ভক্ত