রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ভারতীয় চোরাইপথে আনা দুটি মহিষ জব্দ করার সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও যুবদলের নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্রসহ বিজিবি সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মহিষ দুটি ছিনিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনায় বিজিবি সদস্য হাবিলদার মো. শাহ আলম বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মামলার পটভূমি
শনিবার সকালে মহিষ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে। রোববার রাত দেড়টায় বিজিবি থানায় মামলা দায়ের করে। মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যারা স্থানীয় বিএনপি এবং যুবদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
রাজশাহী বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা করে কারা?
নাজিরপুর, বিয়ানাবোনা, এবং মোল্লাপাড়া গ্রামের ১২ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- জনি ও টনি (দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই টুনুর ছেলে)।
- আক্কাস (সাবেক ওয়ার্ড সদস্য ও বিএনপির সাবেক সভাপতি)।
- বাবলু (৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি)।
- নয়ন (যুবদলের সাধারণ সম্পাদক)।
বিএনপি নেতাকর্মীদের আক্রমণ
বিজিবি সদস্যরা ভারত থেকে চোরাই পথে আনা মহিষের খবর পেয়ে নাজিরপুর গ্রামে অভিযান চালায়। অভিযানে মুকুল নামের এক ব্যক্তি পালিয়ে গেলেও মহিষ দুটি জব্দ করা হয়। মহিষগুলো রাজাবাড়ী ক্যাম্পে নিয়ে আসার পথে বিএনপির এই নেতা–কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতভাবে বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা করেন এবং মহিষ নিয়ে যেতে বাধা দেন। তাঁরা হুমকি দেন যে
মহিষ ছেড়ে না দিলে বিজিবি সদস্যদের লাশ ফেলে দেওয়া হবে।
একপর্যায়ে তাঁরা অতর্কিতভাবে বিজিবি সদস্যদের ধাক্কা দেন এবং কিল-ঘুষি মেরে টেনেহিঁচড়ে মহিষ দুটি ছিনিয়ে নেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর এ মামলা করা হয়। আরো জানুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি-বিএসএফ এর পতাকা বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ
আইন প্রয়োগের পদক্ষেপ
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ‘বিজিবিকে মারধর করে ভারতীয় মহিষ ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় সরকারি কাজে বাধা দানেরও অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা ছিনিয়ে নেওয়া মহিষ দুটি উদ্ধারের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
ঘটনার পর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছেন। বিএনপি নেতা আক্কাসের মোবাইলে ফোন করলে তার ভাই শরীফ জানান,
‘আমার ভাই বাড়িতে নাই। মহিষ নিয়ে আসলে কী হয়েছে, আমি সঠিক বলতে পারব না।’