শায়খ আহমদউল্লাহ
উল্লেখযোগ্য ইসলামী চিন্তাবিদ ও দাঈ
**পরিচিতি**
শায়খ আহমাদুল্লাহ বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ, দাঈ ও সমাজ সংস্কারক। ইসলামী শিক্ষা ও দাওয়াহ প্রচারে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। তার বক্তৃতা ও বক্তব্যগুলো শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার দাওয়াহ প্রচার লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌছেছে।
**জন্ম**
শায়খ আহমাদুল্লাহ ১৯৯০ সালের ১৫ই ডিসেম্বর, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম মোহাম্মাদ দেলোয়ার হোসেন, মায়ের নাম মোসাম্মাত দেলোয়ারা বেগম। বাবা ব্যবসায়ী ছিলেন ও মা গৃহিণী। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
**শিক্ষা**
ছোটবেলা থেকেই শায়খ আহমাদুল্লাহ ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন। তাঁর পড়ালেখার হাতেখড়ি মমতাময়ী মায়ের হাতে। প্রাথমিক পড়াশোনা বশিকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর ভর্তি হন কওমী মাদরাসায়। নোয়াখালীর একাধিক মাদরাসায় কয়েক বছর পড়াশোনা করার পর তিনি ভর্তি হন হাতিয়ার ফয়জুল উলূম মাদরাসায়। সেখানে প্রথিতযশা আলেমে দীন মুফতী সাইফুল ইসলাম (রহ.)-এর সান্নিধ্য ও ছাত্রত্ব লাভের সুযোগ তৈরি হয়। এরপর তিনি দেশের সর্ববৃহৎ দীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলূম হাটহাজারী মাদারায় ভর্তি হন। কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) থেকে (সানুবিয়্যা) উচ্চমাধ্যমিকে পরীক্ষা দিয়ে দশম স্থান, (ফযীলত) স্নাতকে তৃতীয় স্থান ও ২০০১ সালে দাওরায়ে হাদীসে সম্মিলিত মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। দাওরায়ে হাদীস শেষ করে খুলনা দারুল উলূম থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন।
**পরিবার**
শায়খ আহমাদুল্লাহ তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। তার পরিবারে বিশুদ্ধ ইসলাম চর্চা করা হয় এবং পরিবারের প্রতিটি সদস্য ইসলামিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী।
**লিখিত বইসমূহ**
ইসলামী চিন্তাধারা ও দাওয়াহ বিষয়ক বিভিন্ন বই লিখেছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। তাঁর লেখা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সকাল সন্ধ্যার দু’আ ও যিকর পুস্তিকা এবং ‘পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাত পরবর্তী দু’আ ও যিকর’-এর কার্ড চার লক্ষাধিক কপি এ যাবত বিতরণ করা হয়েছে। তাঁর সংকলিত ও সম্পাদিত রমাদান প্ল্যানার দুই লক্ষাধিক কপি বিক্রি হয়েছে। উমরাহ কীভাবে করবেন বইটি পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হচ্ছে। তারাবীহর সালাতে কুরআনের বার্তা পাঠকমহলে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে।
**পুরস্কার ও সম্মাননা**
শায়খ আহমাদুল্লাহ দাওয়াহ ও ইসলামী শিক্ষা প্রচারে তার অবদানের জন্য বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন। তার উল্লেখযোগ্য পুরস্কারগুলো হলো [পুরস্কারগুলোর নাম]। বিশেষ করে, সামাজিক মাধ্যমে তার প্রচারিত দাওয়াহ বিষয়ক ভিডিওগুলো ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।
**বর্তমান কর্মস্থল**
শায়খ আহমাদুল্লাহ বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ভূমিপল্লী জামে মসজিদের খতীবের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। শিক্ষা, সেবা ও দাওয়াহ—তিন বিভাগে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
শুদ্ধ চিন্তা ও বিশুদ্ধ জ্ঞান চর্চার অংশ হিসেবে মূল ধারার বেশিরভাগ টেলিভিশন চ্যানেল এবং ওয়াজ মাহফিলসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত প্ল্যাটফরমে লেকচার দেন তিনি।
ইতোমধ্যেই তিনি বাংলাদেশ ছাড়াও জাপান, ভারত, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।
বিখ্যাত উদ্ধৃতি সমূহ
ক. “মেয়েকে বিয়ে দিতে ভালো পাত্র খুঁজছেন? ফজরের সময় মসজিদে মসজিদে তালাশ করুন।”
খ. “বীরপুরুষ বিয়ে করে আর কাপুরুষ প্রেম করে।”
গ. “পরীক্ষা জীবনের ক্ষুদ্র একটি অংশ মাত্র। পরীক্ষার সাফল্য-ব্যর্থতার ওপর সব সময় জীবনের সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করে না।”
ঘ.”মজলুমের কষ্ট চিরকাল থাকে না, কিন্তু জালিমের প্রতি মানুষের ঘৃণা চিরকাল থাকে।”
ঙ. “৪০ লক্ষ বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য ১৮ কোটি মানুষ দাঁড়ালে কোনো দুর্যোগই পরাস্ত করা কঠিন নয়।”
এছাড়া ২০২২ এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ভয়াবহ বন্যায় বানভাসী মানুষদের পাশে দাড়ানোর জন্য ১০০ কোটি টাকার ত্রান সহায়তা উত্তোলন এবং বিতরনের কাজেও তিনি ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছেন।