সাইকোলজিক্যাল ট্রিকস এবং ভুয়া প্রোফাইল হ্যাকারদের জন্য খুবই জনপ্রিয় হ্যাকিং মেথড। হ্যাকাররা যখন তাদের শিকারকে মানসিকভাবে প্রভাবিত করে, তখন তারা খুব সহজেই তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়। এই পর্বে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব কিভাবে হ্যাকাররা সাইকোলজিক্যাল ট্রিকস এবং ভুয়া প্রোফাইল ব্যবহার করে মানুষকে বোকা বানায়
হ্যাকিং পদ্ধতি
১. সাইকোলজিক্যাল ট্রিকসের কৌশল:
i. ফিয়ার অ্যান্ড আন্ডারপ্রেশার:
কৌশল: হ্যাকাররা কখনও কখনও ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করে তাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। উদাহরণস্বরূপ, তারা ব্যবহারকারীকে জানায় যে তাদের অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কার্যক্রম ঘটছে এবং দ্রুত তথ্য আপডেট করতে হবে।
উদাহরণ: “আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। দ্রুত আপনার পাসওয়ার্ড আপডেট করুন!”
ii. আকর্ষণীয় অফার এবং প্রলোভন:
কৌশল: হ্যাকাররা ব্যবহারকারীদের আকর্ষণীয় অফার বা পুরস্কারের প্রলোভন দিয়ে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। এই অফারগুলি সাধারণত অত্যন্ত লোভনীয় এবং অবাস্তব হয়।
উদাহরণ: “ফ্রি আইফোন জেতার সুযোগ! শুধুমাত্র আপনার নাম এবং ঠিকানা দিন।”
iii. প্রেসিং ও টাইম সেনসিটিভ প্রপোজাল:
কৌশল: হ্যাকাররা ব্যবহারকারীদের চাপ দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। সময় সীমিত অফার বা জরুরি প্রস্তাবের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
উদাহরণ: “এই অফার শুধুমাত্র ১ ঘণ্টার জন্য প্রযোজ্য। এখনই আপনার তথ্য দিন!”
২. ভুয়া প্রোফাইল তৈরির কৌশল:
i. অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য প্রোফাইল:
কৌশল: হ্যাকাররা প্রোফাইল তৈরি করতে ব্যবহৃত ব্যক্তির সঠিক নাম, ছবি এবং জীবনের বিস্তারিত বিবরণ ব্যবহার করে। এই প্রোফাইলগুলি এমনভাবে বানায় যা রিয়েল এবং অথেনটিক মনে হয়। যার ফলে বিশ্বাসযোগ্য পরিচয় তৈরি করে।
উদাহরণ: সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের ছবি এবং তথ্য কপি করে তৈরি করা প্রোফাইল।
ii. কাস্টমাইজড মেসেজিং:
কৌশল: হ্যাকাররা প্রোফাইলের মাধ্যমে কাস্টমাইজড মেসেজ পাঠায় যা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত আগ্রহ ও প্রয়োজনের সাথে সম্পর্কিত হয়। এই মেসেজগুলি অত্যন্ত ব্যক্তিগতকৃত এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়।
উদাহরণ: “আপনার পোস্টের মধ্যে আমি দেখেছি আপনি নতুন ব্যবসা শুরু করতে চান। আমি আপনার সাথে পার্টনারশিপ করতে আগ্রহী।”
iii. রিপুটেড বা ফেমাস পরিচয়ের অপব্যবহার:
কৌশল: হ্যাকাররা পরিচিত বা ফেমাস ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে প্রোফাইল তৈরি করে। এটি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে সহায়তা করে।
উদাহরণ: একটি প্রোফাইল যা কোনও বিখ্যাত সেলিব্রিটির নাম ব্যবহার করে এবং তাদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া অফার পাঠানো হয়।
৩. এইসব হ্যাকারদের থেকে কিভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখবেন:
i. বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করুন:
সন্দেহজনক প্রোফাইল বা মেসেজের ক্ষেত্রে প্রোফাইলের সত্যতা যাচাই করুন। পরিচিত বন্ধুদের প্রোফাইল চেক করুন এবং সরাসরি যোগাযোগ করুন।
ii. সতর্কতার সাথে লিঙ্কে ক্লিক করুন:
অজানা লিঙ্ক বা মেসেজে ক্লিক করার আগে লিংক ভেরিফাই করুন। ফিশিং লিঙ্কগুলি থেকে সতর্ক থাকুন।
iii. প্রাইভেসি সেটিংস আপডেট করুন:
সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের প্রাইভেসি সেটিংস আপডেট করুন। অজানা বা অপরিচিত কেউ যাতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে না পারে তা নিশ্চিত করুন।
iv. Two Factor Authentication:
আপনার অ্যাকাউন্টে two factor authentication Enable করুন। এটি আপনার অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে।
সাইকোলজিক্যাল ট্রিকস এবং ভুয়া প্রোফাইল ব্যবহার করে হ্যাকাররা মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারে এবং তাদেরকে বোকা বানাতে পারে। সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রোফাইলের সুরক্ষা নিশ্চিত করে আপনি এই ধরনের প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
Collected : Team Matrix