তোমরা সত্যকে মিথ্যের সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না। @@ surah baqara ayat 42 Al Quran 2:42 @@

Remittance কি? রেমিট্যান্স বোনাস ২০২৪/২০২৫

Remittance কি? রেমিট্যান্স বোনাস ২০২৪/২০২৫
Remittance কি? রেমিট্যান্স বোনাস

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে, উন্নয়ন প্রকল্পে এবং পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখে। এই Remittance পাঠানোর জন্য সরকার কর্তৃক অতিরিক্ত যে বোনাস দেয়া হয় তা হলো রেমিট্যান্স বোনাস। বাংলাদেশ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসী আয় থেকে মোট ৮,৩১৭.৬২ মিলিয়ন ডলার অর্জন করেছে।

রেমিট্যান্স কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

রেমিট্যান্স হলো প্রবাসীদের উপার্জিত অর্থ, যা তারা তাদের পরিবার বা দেশে পাঠান। এটি বাংলাদেশ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি অপরিহার্য অংশ। প্রবাসীদের শ্রম, ত্যাগ ও অবদান দেশের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করছে। বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর প্রচার ও সরকারি প্রণোদনার ফলে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ক্রমাগত বাড়ছে।

রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলতে কী বোঝায়?

প্রবাসীরা যারা নিজেদের শ্রম ও দক্ষতা দিয়ে বিদেশে উপার্জন করেন এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখেন, তাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলা হয়। এই যোদ্ধারা দেশের উন্নয়নের নীরব কারিগর।

বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস কোন দেশ?

সাধারনত বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের প্রধান উৎস সৌদি আরব। তবে এবছর সংযুক্ত আরব আমিরাত সবার আগে, এরপরে রয়েছে , মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং কুয়েত।

Remittance কি? রেমিট্যান্স বোনাস ২০২৪/২০২৫
Remittance / রেমিট্যান্স -দেশ অনুযায়ী
  1. সংযুক্ত আরব আমিরাত (U.A.E.): মোট আয় ১,৬৭৫.০৭ মিলিয়ন ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ২০%।
  2. সৌদি আরব (K.S.A.): ৭৩৬.৭৫ মিলিয়ন ডলার।
  3. যুক্তরাষ্ট্র (U.S.A.): ১,১৫০.২০ মিলিয়ন ডলার, যা মোট আয়ের ১৪%।
  4. যুক্তরাজ্য (U.K.): ৯৭৫.২৬ মিলিয়ন ডলার।
  5. কুয়েত ও মালয়েশিয়া: যথাক্রমে ৫২৭.৪৬ ও ৫৪১.৯৯ মিলিয়ন ডলার।

উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে বাহরাইন, কাতার, ওমান এবং সিঙ্গাপুর থেকেও।

২০২৪ সালের রেমিট্যান্সে অর্জন

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রবাসীরা মোট ২৪২ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ে ১৯১ কোটি ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। প্রথম ২১ দিনেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স (Remittance) এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রেমিট্যান্স ২৫০ কোটি ডলারের সীমা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ১৪% প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জুন ২০২৪ মাসে ২৫৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

রেমিট্যান্স বোনাস কী এবং কত বোনাস পাওয়া যায়?

সরকার বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে ২.৫% নগদ প্রণোদনা (বোনাস) প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ ১ লক্ষ টাকা সমপরিমান বিদেশী মুদ্রা বিদেশ থেকে বৈধ পথে পাঠায়, তাহলে প্রাপক ২,৫০০ টাকা অতিরিক্ত বোনাস পাবেন বা মোট ১,০২,৫০০ টাকা ।

রেমিট্যান্স (Remittance) পাঠানোর সহজ উপায়

রেমিট্যান্স (Remittance) পাঠানোর জন্য সাধারণত ব্যাংক, মানি ট্রান্সফার সার্ভিস এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা (যেমন বিকাশ, ট্যাপট্যাপ) ব্যবহার করা হয়। এজন্য প্রাপকের একটি বৈধ অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক।

ডায়াস্পোরা রেমিট্যান্স কি?

ডায়াস্পোরা রেমিট্যান্স বলতে বোঝায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের তাদের পরিবার এবং দেশের উন্নয়নে পাঠানো অর্থ। উদাহরণস্বরূপ, সৌদি আরবের একজন শ্রমিক মাসে ৫০০ ডলার পাঠালে সেটি তার পরিবারের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশের জন্য রেমিট্যান্সের প্রভাব

রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির রক্তস্রোত হিসেবে কাজ করে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়ানো থেকে শুরু করে সামগ্রিক উন্নয়ন পর্যন্ত এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২০২৫ সালের পূর্বাভাস

২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধি ও ধারাবাহিকতা দেখে অনুমান করা যায়, ২০২৫ সালে রেমিট্যান্সের ধারা আরও শক্তিশালী হবে।

  1. লক্ষ্যমাত্রা:

    প্রবাসী আয়ের বার্ষিক লক্ষ্য ২০২৫ সালে ১০,০০০ মিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে পারে।

  2. বৈধ চ্যানেলের ব্যবহার বৃদ্ধি:

    সরকারের প্রণোদনা ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সিস্টেম আরও আধুনিকায়নের ফলে বৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর হার বাড়বে।

  3. নতুন

    বাজার:

    ইউরোপ ও এশিয়ার নতুন কর্মসংস্থানের বাজার থেকে প্রবাসী আয়ের ধারা আরও জোরালো হবে।

  4. টাকা পাচারের হার কমানো:

    সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, অবৈধ উপায়ে অর্থ পাঠানোর হার আরও কমবে।

উপসংহার

২০২৪ সালের রেমিট্যান্সের তথ্য প্রমাণ করে, প্রবাসী কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম ও সরকারের সঠিক নীতিমালার সম্মিলনে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হচ্ছে। ২০২৫ সালে এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও রিজার্ভ আরও উন্নত হবে।

FAQs

১. ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স কোন মাসে এসেছে?
জুন মাসে সর্বোচ্চ ২,৫৪১.৬৫ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

২. রেমিট্যান্সের প্রধান উৎস দেশ কোনটি?
সংযুক্ত আরব আমিরাত (U.A.E.) ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।

৩. রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য কোন মাধ্যম সবচেয়ে সহজ?
সিন্ডিকেটবিহীন ব্যাংকিং পদ্ধতিগুলো যথেস্ট নিরাপদ এবং সহজ। তবে  মোবাইল ফিনান্সিয়াল মাধ্যম যেমন বিকাশ, ট্যাপট্যাপ এর মাধ্যমেও টাকা পাঠানো যায়।

৪. সরকার কীভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করছে?
সরকার প্রবাসীদের জন্য ২.৫% নগদ প্রণোদনা ও উন্নত ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে।

৫. রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য কী কী উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে?
নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা, বৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠানো সহজতর করা, এবং ট্যাক্স সুবিধা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *