সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটক সংখ্যা সীমিত
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। তবে সম্প্রতি, দ্বীপটির নাজুক পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার নতুন পর্যটক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী নভেম্বর মাস থেকে পর্যটকদের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রাতযাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে পর্যটকরা আবার রাত কাটানোর সুযোগ পাবেন। কিন্তু প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২,০০০ জন পর্যটক দ্বীপে প্রবেশের অনুমতি পাবেন। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপটিকে পরিষ্কার এবং সংরক্ষণের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হবে।
নতুন বিধিনিষেধের কারণ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশগত অবস্থা ক্রমশই সংকটে পড়ছে। অতিরিক্ত পর্যটক সংখ্যা, অপরিকল্পিত পর্যটন কার্যক্রম, এবং প্লাস্টিক বর্জ্য দ্বীপটির সামুদ্রিক জীবন ও প্রবাল প্রাচীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এসব সমস্যা থেকে দ্বীপটিকে রক্ষা করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এই নতুন নিয়মাবলী প্রণয়ন করেছে। এই সিদ্ধান্ত দ্বীপের পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপটি পরিষ্কার কার্যক্রমের জন্য বন্ধ রাখা হবে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো দ্বীপের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই সুন্দর দ্বীপকে সুরক্ষিত রাখা।
ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং সহকারী প্রেস সেক্রেটারিরা নায়েম আলী ও সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন ব্রিফিংয়ে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপে গমনে রেজিষ্ট্রেশন এর ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
পর্যটকদের জন্য পরামর্শ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যারা ভ্রমণে যাবেন, তাদের জন্য কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
- দ্বীপে ভ্রমণের সময় পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
- প্লাস্টিকের ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে।
- বর্জ্য যেখানে-সেখানে না ফেলা, এবং পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা।
দ্বীপের পরিবেশ সংরক্ষণে পর্যটকদেরও ভূমিকা রাখতে হবে, যাতে এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দীর্ঘদিন ধরে টিকে থাকে।
সেন্ট মার্টিনের আকর্ষণ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। সাগরের নীল জলরাশি, সাদা বালুর সৈকত, এবং নানান ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী দ্বীপটিকে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পর্যটকরা এখানে এসে প্রবাল রীফ, কচ্ছপ, এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দেখতে পান। দ্বীপটির সূর্যাস্তের দৃশ্য পর্যটকদের স্মৃতিতে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা রেখে যায়। এছাড়া, দ্বীপের স্থানীয় খাবার, যেমন সামুদ্রিক মাছ ও শুটকি, পর্যটকদের মাঝে জনপ্রিয়।
শেষ কথা
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে রক্ষা করার জন্য এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটনকেন্দ্র এই দ্বীপকে রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।