বাংলাদেশের বাইকারদের জন্য এক নতুন অধ্যায় হবে Royal Enfield
বিশ্ববিখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড Royal Enfield এবার বাংলাদেশের বাজারে আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে পা রাখতে যাচ্ছে। ইফাদ মোটরসের উদ্যোগে, Royal Enfield আগামী ২১শে অক্টোবর ২০২৪-এ বাংলাদেশে লঞ্চ হতে যাচ্ছে। এই খবরটি বাইকারদের মধ্যে বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু যেসব মানুষ Royal Enfield সম্পর্কে তেমন জানেন না, তাদের জন্য প্রশ্ন উঠতে পারে – কি আছে এই বাইকগুলোতে যে এগুলো এত স্পেশাল?
Royal Enfield এর ইতিহাস
Royal Enfield বিশ্বের অন্যতম পুরনো মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড। প্রথম Royal Enfield মোটরসাইকেল তৈরি হয় ১৯০১ সালে। ব্রিটিশ ডিজাইনার বব ওয়াকার স্মিথ এবং ফরাসি ডিজাইনার জুলস গবিয়েট এই প্রথম মডেলটি ডিজাইন করেন। এটি লন্ডনের স্ট্যানলি সাইকেল শোতে প্রদর্শিত হয়। Royal Enfield এর গোড়া যুক্তরাজ্যে হলেও, ১৯৫৫ সালে মাদ্রাজ মোটরস ভারতে এই বাইকটির উৎপাদন শুরু করে, যার ফলে ব্র্যান্ডটির সাথে একটি শক্তিশালী ভারতীয় বন্ডিং রয়েছে।
Royal Enfield বুলেট: একটি Legendary মডেল
১৯৩২ সালে Royal Enfield তাদের সবচেয়ে বিখ্যাত বাইক মডেল ‘Bullet’ লঞ্চ করে। এই মডেলটি আজও বাইক প্রেমীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে শুধুমাত্র পুরনো ব্র্যান্ড হওয়া Royal Enfield এর সফলতার কারণ নয়। এর ক্লাসিক ডিজাইন এবং ভিনটেজ লুক বাইকারদের একটি বিশেষ ধরনের নস্টালজিক ভাইব দেয়, যা অন্য ব্র্যান্ডে সহজে পাওয়া যায় না।
কেন Royal Enfield এত জনপ্রিয়?
Royal Enfield এর বাইকগুলো মূলত ‘Cruiser’ বাইক, যা লং রোডের রাইডের জন্য আরামদায়ক। এছাড়া, এই বাইকগুলোর হাই কিউবিক ক্যাপাসিটি (cc) বাইকারদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। শুধুমাত্র একটি বাইক নয়, Royal Enfield একটি সংস্কৃতি এবং জীবনের ধারা প্রতিফলিত করে, যা বাইকারদের মধ্যে বিশ্বব্যাপী একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।
বাংলাদেশে Royal Enfield: একটি বিলাসবহুল পণ্য?
ইসমাইল হোসেন, ঢাকা ভিত্তিক একজন বাইকার, বলেন, “Royal Enfield বাংলাদেশে আসার ফলে সাধারণ ক্রেতা বাজারে তেমন প্রভাব ফেলবে না। কারণ এর কম সিসি বাইকগুলোর দাম অন্যান্য বাইকের তুলনায় বেশি থাকবে। এটি সম্ভবত বিলাসবহুল পণ্যে পরিণত হবে এবং বাইক প্রেমীদের জন্য সীমিত উপলব্ধি থাকবে।”
নাবিল সাদেক, আরেক বাইকার, বলেন, “আমার জন্য এটা শুধু হর্সপাওয়ার নয়, বরং বাইকের সাথে ব্যক্তিগত সংযোগের বিষয়। Royal Enfield এর হর্সপাওয়ার অন্যান্য রেসিং বাইক যেমন কাওয়াসাকি থেকে কম হতে পারে, কিন্তু এর ডিজাইন অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এবং রাইডারকে একটি ক্লাসিক লুক দেয়।”
বিভিন্ন নায়ক/ইনফ্লুয়েন্সারদের পছন্দ Royal Enfield
Royal Enfield এর বাইকগুলো অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ব্যবহার করেছেন, বিশেষ করে বলিউড এবং হলিউড তারকারা। এর মধ্যে Arjun Reddy মুভির কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। Royal Enfield এর প্রতি ভালোবাসা মূলত এখান থেকেই আসে। ১৫০ কিমি/ঘন্টা গতিতে পৌঁছাতে কতক্ষণ সময় লাগে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়; আসল বিষয় হলো, বাইকটি আপনার চরিত্রের সাথে মানায় কিনা।
বাংলাদেশে Royal Enfield লঞ্চের প্রস্তুতি:
মোশিউর রহমান, একজন বাইকার ও বাইক প্রেমিক, Royal Enfield এর বাংলাদেশে লঞ্চ নিয়ে খুবই উত্তেজিত। তিনি বলেন
“Royal Enfield এর বাইকগুলোর লুক, সাউন্ড খুব ভালো, তবে এদের কম্পন অনেক বেশি এবং স্পিড তুলনামূলকভাবে কম। এছাড়া, এই বাইকগুলোর মাইলেজও অন্যান্য বাইকের তুলনায় কম। ”
লঞ্চ হতে যাওয়া মডেলসমূহঃ
Royal Enfield এর চারটি মডেল – Bullet, Meteor, Hunter এবং Classic – বাংলাদেশে লঞ্চ হতে চলেছে। বাংলাদেশে এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত ১৬৫ সিসি এর বেশি বাইক আমদানি এখনো নিষিদ্ধ।
ট্যাগস: Royal Enfield Bangladesh, Royal Enfield launch, Bangladesh motorbike, bike lovers, Royal Enfield Bullet, Bangladesh cruiser bike