তোমরা সত্যকে মিথ্যের সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না। @@ surah baqara ayat 42 Al Quran 2:42 @@

ই-পাসপোর্ট এপ্লিকেশন ২০২৫: ৫টি টিপস নতুন পাসপোর্ট এর

ই-পাসপোর্ট এপ্লিকেশন ২০২৫: ৫টি টিপস নতুন পাসপোর্ট এর
ই-পাসপোর্ট এপ্লিকেশন ২০২৫: ৫টি টিপস নতুন পাসপোর্ট এর

একজন নাগরিকের আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিচয়পত্র হলো পাসপোর্ট। বিশ্ব ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা, উন্নত চিকিৎসা অথবা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যক্তিগত ব্যবসার প্রসার –যাই হোক না কেন, প্রথম ধাপেই প্রয়োজন একটি নির্ভরযোগ্য পাসপোর্ট। বাংলাদেশে পূর্বে ইস্যুকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি পাসপোর্ট) এর চেয়েও অনেক বেশি সুরক্ষিত ও কার্যকর সমাধান হলো ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট।
এই আর্টিকেল এর উদ্দেশ্য:

  • ই-পাসপোর্ট এপ্লিকেশন ২০২৫ করবেন কিভাবে
  • নতুন পাসপোর্ট করতে কি কাগজপত্র লাগে
  • এমআরপি পাসপোর্ট এর নিয়ম

বাংলাদেশে সাধারণত ৩ ধরনের পাসপোর্ট রয়েছে। সবুজ পাসপোর্ট সকল জনসাধারনের জন্য, নীল পাসপোর্ট সকল সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য এবং লাল পাসপোর্ট ডিপ্লোমেটিক ব্যক্তিবর্গের জন্য।

ই-পাসপোর্ট কী?

ই-পাসপোর্ট হলো একটি আধুনিক বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যাতে একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত মাইক্রোপ্রসেসর চিপ সংযুক্ত থাকে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত সকল তথ্য, ডিজিটাল স্বাক্ষর, ছবি, দশ আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশের বায়োমেট্রিক তথ্যগুলো নিরাপদে সংরক্ষিত থাকে।

এমআরপি পাসপোর্ট এর চেয়ে ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা:

১. সর্বোচ্চ নিরাপত্তা: ই-পাসপোর্টে যে ব্যবহৃত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা পাসপোর্ট জাল করা প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে। এর ফলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নিশ্চয়তা থাকে এবং পাসপোর্ট জালিয়াতি দূর করা যায়।

২. দ্রুতগতির ইমিগ্রেশন: ২০২৫ সালের বিশ্বের অনেকগুলো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-পাসপোর্টধারীদের জন্য অটোমেটিক ই-গেট সুবিধা রয়েছে। এটি ব্যবহার করে খুব কম সময়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যায়। এ সকল গেটে প্রথমে পাসপোর্ট স্ক্যান করে একটি নির্দিষ্ট জায়গা দিয়ে হেটে গেলেই ইমিগ্রেশন শেষ হয়ে যায়, ইমিগ্রেশন অফিসার এর জন্য লাইনে অপেক্ষা করা লাগে না। এই সুবিধা এমআরপি পাসপোর্টে নেই।

৩. সহজ তথ্য যাচাই: ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ই-পাসপোর্ট এর মাইক্রোপ্রসেসর চিপ স্ক্যান করে সহজেই আপনার সকল তথ্য যাচাই করতে পারে, ফলে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত ও ঝামেলাবিহীন হয়।

৪. আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত: এই পাসপোর্টটি ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (ICAO) এর নিয়ম অনুযায়ী তৈরি, তাই এটি বিশ্বব্যাপী গৃহীত। জানুন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট এর তালিকায় বাংলাদেশ কত?

ই-পাসপোর্ট
ই-পাসপোর্ট

 

ই-পাসপোর্ট এপ্লিকেশন ২০২৫: এর নতুন নিয়ম

ই-পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়া এখন অনেক সহজ ও ডিজিটালবান্ধব। চলুন, পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক:

১. একাউন্ট তৈরী করা:

  •  প্রথমেই বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টালে ([ https://www.epassport.gov.bd/ ] ( https://www.epassport.gov.bd/ )) প্রবেশ করুন। 
  •  “Apply Online” বা “নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করুন” অপশনে ক্লিক করুন।
  •  আপনার বর্তমান ঠিকানা (যেখানে আপনি বসবাস করছেন) সেই অনুযায়ী নিকটস্থ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন করুন। পাসপোর্ট এর ঠিকানা ভেরিফিকেশন সাধারণত বর্তমান ঠিকানা অনুসারেই হয়ে থাকে (যদি প্রয়োজন হয়)।
  •  আপনার একটি চলমান ইমেইল এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে পোর্টালে একাউন্ট তৈরী করুন। আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিঙ্ক পাঠানো হবে, সেটিতে ক্লিক করে আপনার অ্যাকাউন্টটি এক্টিভেট করুন। এই ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করতে হবে।

২. এপ্লিকেশন ফরম্যাট পূরণ করা:

  • এই ধাপে মোট ৯ টি ক্যাটাগরির তথ্য আপনাকে দিতে হবে। সবগুলো তথ্য খুবই সতর্কতার সাথে পূরণ করুন।
  • আপনার ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন: নাম, পিতামাতার নাম, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র নম্বর ইত্যাদি) অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পূরণ করুন। বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন, আপনার নামের বানান যেন জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের সাথে হুবহু মিলে যায়।
  • পাসপোর্টের মেয়াদ (৫ বছর অথবা ১০ বছর) এবং পৃষ্ঠার সংখ্যা (৪৮ পৃষ্ঠা অথবা ৬৪ পৃষ্ঠা) আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী নির্বাচন করুন।
  • সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর আবেদনপত্রটি সাবমিট করুন। সাবমিট করার পর আপনি আপনার আবেদনের একটি সারাংশ (Application Summary) এবং পূরণকৃত আবেদনপত্রের একটি পিডিএফ কপি (Filled Application Form) ডাউনলোড করার অপশন থাকবে। উভয় কপিই প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন।

৩. পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করবো কিভাবে?

আবেদনপত্র সফলভাবে সাবমিট করার পর আপনাকে নির্ধারিত পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে হবে। অনলাইনে এবং অফলাইনে উভয় পদ্ধতিতেই ফি পরিশোধের সুবিধা রয়েছে:

  •  অনলাইন পেমেন্ট: বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক কার্ড (ভিসা, মাস্টারকার্ড, এমেক্স) এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (যেমন: বিকাশ, রকেট, নগদ, উপায় ইত্যাদি) ব্যবহার করে অনলাইনে সহজেই ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
  •  ব্যাংকের মাধ্যমে: সোনালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া এবং ঢাকা ব্যাংক সহ অন্যান্য নির্ধারিত ব্যাংকের শাখায় এ-চালানের মাধ্যমেও সরাসরি ফি জমা দেওয়া যাবে। ফি জমা দেয়ার রিসিট সাথে রাখুন।

ই-পাসপোর্টের ফি কত? (সর্বশেষ ফি- ১৫% ভ্যাটসহ) – ২০২৫:

ই-পাসপোর্টের ফি কত?
ই-পাসপোর্টের ফি

(বিঃদ্রঃ এই ফি সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। আবেদনের পূর্বে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ তথ্য নিশ্চিত হয়ে নিন।). সরকারি চাকরিজীবী যাদের NOC/অবসর গ্রহণের প্রমাণপত্র (PRL) আছে, তারা নিয়মিত ফি-তে জরুরি সেবা এবং জরুরি ফি-তে অতি জরুরি সেবা পাবেন। শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল: ভারতে যেভাবে বৈধ থাকবেন

নতুন পাসপোর্ট করতে কি কাগজপত্র লাগে

অনলাইন আবেদন ও ফি পরিশোধের পর, আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ নির্ধারিত তারিখে নির্বাচিত পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে।

সাধারণভাবে যে কাগজপত্রগুলো লাগে (সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী):

  1.  অনলাইন আবেদনের প্রিন্ট কপি (Application Summary এবং Barcode সহ Filled Application Form)।
  2.  ফি পরিশোধের প্রমাণপত্র (এ-চালান বা অনলাইন পেমেন্টের স্লিপ)।
  3.  জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC – English Version) এর মূলকপি ও ফটোকপি।
  4.  ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য: অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC – English Version) এবং পিতামাতার NID কার্ডের ফটোকপি।
  5.  ১৮-২০ বছর বয়সীদের জন্য: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC – English Version)।
  6.  ২০ বছরের ঊর্ধ্বে আবেদনকারীদের জন্য: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) আবশ্যক। তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন থেকে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC – English Version) গ্রহণযোগ্য।
  7.  পূর্ববর্তী পাসপোর্টের (যদি থাকে) মূলকপি এবং ডাটা পেজের (তথ্য সম্বলিত পাতা) ফটোকপি।
  8.  পেশা প্রমাণের জন্য সংশ্লিষ্ট সনদপত্র (যেমন: চাকরিজীবীদের জন্য NOC/সরকারি আদেশ (GO), শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি, ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি ইত্যাদি)। এই সনদপত্রগুলো ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে আপলোডকৃত থাকতে হবে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  9.  বিবাহিতদের জন্য বিবাহ সনদ/নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  10.  ৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য 3R সাইজের ল্যাব প্রিন্ট রঙিন ছবি (গ্রে ব্যাকগ্রাউন্ড) জমা করতে হবে।
  11.  হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে, মূল জিডির কপি দেখাতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ নতুন তথ্য: ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে বর্তমানে কোনো কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন নেই। 

৪. বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান:

নির্ধারিত তারিখে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য—অর্থাৎ, ছবি তোলা, দশ আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশ স্ক্যান—প্রদান করতে হবে। এই সময়ে আপনার জমাকৃত কাগজপত্র পুনরায় যাচাই করা হবে।

৫. পুলিশ ভেরিফিকেশন (সর্বশেষ আপডেট):

একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপে, বাংলাদেশ সরকার পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করেছে।

# নতুন নিয়ম অনুযায়ী: নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে, অনলাইনে যাচাইকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

# বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের (যাদের NID নেই) জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে, অনলাইনে যাচাইকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়া হবে।

# পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে যদি বর্তমান পাসপোর্টের মৌলিক তথ্যের (যেমন: নিজের নাম, পিতামাতার নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান) পরিবর্তন প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে।

তবে এখনো পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হতে পারে।

  •  আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্যের (যেমন: স্থায়ী ঠিকানা) সাথে আবেদনপত্রের তথ্যের গরমিল থাকলে বা ঠিকানা অস্পষ্ট/অসম্পূর্ণ হলে।
  •  আবেদনকারী এমন কোনো ঠিকানা ব্যবহার করলে যা NID-তে উল্লেখ নেই বা হালনাগাদ করা হয়নি।
  •  আবেদন সম্পর্কে বিশেষ কোনো অনুসন্ধান বা যাচাইয়ের প্রয়োজন হলে।

ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ:

আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এবং আপনার পাসপোর্ট প্রিন্টিং ও বিতরণের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে, আপনার নিবন্ধিত মোবাইল নম্বরে একটি SMS এর মাধ্যমে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার ডেলিভারি স্লিপ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখিয়ে নতুন ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান

ই-পাসপোর্ট আবেদনের স্ট্যাটাস কীভাবে জানবেন?

আপনি ঘরে বসেই আপনার ই-পাসপোর্ট আবেদনের বর্তমান অবস্থা ট্র্যাক করতে পারবেন:

পাসপোর্ট অধিদপ্তর বিভিন্ন সংক্ষিপ্ত শব্দ ব্যবহার করে ই-পাসপোর্ট আবেদনের বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে আবেদনকারীকে অবহিত করে। এই স্ট্যাটাসগুলোর অর্থ বুঝতে অনেকেরই অসুবিধা হতে পারে। অনলাইন পোর্টাল: ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টালে ([https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status](https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status)) আপনার অ্যাপ্লিকেশন আইডি (Application ID) অথবা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি (OID) এবং জন্ম তারিখ ব্যবহার করে সহজেই স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্ট্যাটাস এবং সেগুলোর ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:

ই-পাসপোর্ট আবেদনের স্ট্যাটাস
ই-পাসপোর্ট আবেদনের স্ট্যাটাস

১. সাবমিটেড (Submitted): এই স্ট্যাটাসের অর্থ হলো আপনার ই-পাসপোর্টের আবেদনটি সফলভাবে পাসপোর্ট অফিসের ওয়েব সার্ভারে জমা হয়েছে। এটি আবেদন প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ।

২. অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিডিউল (Appointment Scheduled): এই বার্তাটি নির্দেশ করে যে, পাসপোর্ট অফিসে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি, আঙুলের ছাপ, আইরিশ স্ক্যান) প্রদানের জন্য সাক্ষাতের সময়সূচি সফলভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

৩. এনরোলমেন্ট ইন প্রসেস (Enrolment in Process): যখন এই স্ট্যাটাসটি দেখবেন, তার মানে হলো আবেদনপত্রের হার্ড কপি এবং আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্টসহ) পাসপোর্ট অফিসে সফলভাবে জমা হয়েছে এবং আপনার আবেদনটি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে। এই ধাপটি সম্পন্ন হতে সাধারণত ১ থেকে ২ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে।

৪. পেন্ডিং এসবি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (Pending SB Police Clearance): এই স্ট্যাটাসটি দেখালে বুঝতে হবে, আপনার আবেদনটি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক নিয়মে এনআইডি-যাচাইকৃত নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন শিথিল করা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে (যেমন তথ্যের গরমিল বা নির্দিষ্ট ধরনের আবেদনে) এটির প্রয়োজন হতে পারে। এই ধাপ সম্পন্ন হতে সাধারণত ৩ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে, তবে ক্ষেত্রবিশেষে তদন্তের স্বার্থে আরও বেশি সময়ও লাগতে পারে। পুলিশ কর্মকর্তা সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট হলেই ইতিবাচক প্রতিবেদন দাখিল করেন।

৫. পেন্ডিং ফাইনাল অ্যাপ্রুভাল (Pending Final Approval): পুলিশ ভেরিফিকেশন (যদি প্রযোজ্য হয়) সন্তোষজনকভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর এই ধাপটি আসে। এর অর্থ হলো, আপনার আবেদনটি এখন পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালকের (এডি) চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অপেক্ষমাণ। এই অনুমোদনের জন্য সাধারণত ১ থেকে ৪ কার্যদিবস প্রয়োজন হয়, তবে আবেদনপত্রের সংখ্যার উপর নির্ভর করে কখনো কখনো ৮ থেকে ১০ দিনও লাগতে পারে।

৬. অ্যাপ্রুভড (Approved): এই বার্তাটি একটি খুবই ইতিবাচক সঙ্কেত! এর মানে হলো, পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সাধারণত সহকারী পরিচালক) আপনার পাসপোর্টটি প্রিন্ট করার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন। এই ধাপটি সম্পন্ন হতে সাধারণত ১ থেকে ৩ কার্যদিবস লাগে।

৭. পেন্ডিং ইন প্রিন্ট কিউ (Pending in Print Queue): আপনার পাসপোর্ট প্রিন্টের জন্য অনুমোদিত হয়েছে এবং এটি প্রিন্টিংয়ের জন্য সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষমাণ।

৮. ইন প্রিন্টিং (In Printing): আপনার পাসপোর্টটি বর্তমানে প্রিন্টিংয়ের কাজ চলছে।

৯. প্রিন্টেড (Printed) / রেডি ফর ইস্যুয়েন্স (Ready for Issuance): সুসংবাদ! আপনার ই-পাসপোর্ট সফলভাবে প্রিন্ট করা হয়েছে এবং এটি এখন বিতরণের জন্য প্রস্তুত।

১০. পাসপোর্ট ইস্যুড (Passport Issued) / শিফট (Shipped): আপনার ই-পাসপোর্ট এখন বিতরণের জন্য পাসপোর্ট অফিস থেকে পাঠানো হয়েছে অথবা সংগ্রহের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আপনি শীঘ্রই আপনার মোবাইলে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য একটি SMS পাবেন।
(উপরে উল্লেখিত সময়সীমাগুলো সাধারণ পরিস্থিতি সাপেক্ষে এবং বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হতে পারে।)

এমআরপি পাসপোর্ট থেকে ই-পাসপোর্ট ২০২৫ / পাসপোর্ট নবায়ন

যাদের কাছে বর্তমানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) রয়েছে, তারাও মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অথবা মেয়াদ থাকাকালীন সময়ে নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রক্রিয়াটি মূলত নতুন আবেদনের মতোই, তবে অনলাইন আবেদনপত্রে পূর্ববর্তী পাসপোর্টের তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের দিন পুরনো পাসপোর্টটি অবশ্যই সাথে নিয়ে আসতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ টিপস ও কৌশল (অবশ্যই মনে রাখবেন):

১. নির্ভুল তথ্য প্রদান: আবেদনপত্রে প্রতিটি তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী নির্ভুলভাবে লিখুন। সামান্য ভুলও আপনার পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন মাত্র ১ মিনিটে

২. সঠিক ডকুমেন্ট আপলোড: অনলাইন আবেদনের সময় যে সকল ডকুমেন্ট (যেমন: NID, BRC, পেশাগত সনদ, GO/NOC) আপলোড করার অপশন পাবেন, সেগুলোর স্ক্যান কপি প্রস্তুত রাখুন এবং সঠিকভাবে আপলোড করুন।

৩. সঠিক ইমেইল ও মোবাইল নম্বর: এপ্লিকেশন প্রক্রিয়ায় আপনার ব্যক্তিগত ইমেইল আইডি এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করুন, কারণ পাসপোর্ট সংক্রান্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ নোটিফিকেশন এগুলোর মাধ্যমেই পাঠানো হবে।

৪. ডেলিভারি সময়: সাধারণ ডেলিভারি ১৫-২১ কার্যদিবস, জরুরি ডেলিভারি ৭-১০ কার্যদিবস এবং অতি জরুরি ডেলিভারি ২ কার্যদিবসের মধ্যে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে (পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং অন্যান্য তথ্যাদির সঠিকতার উপর নির্ভরশীল)।

৫. দালাল থেকে সাবধান: পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশে অনেক দালাল চক্র সক্রিয় থাকতে পারে। তাদের এড়িয়ে চলুন।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!