তোমরা সত্যকে মিথ্যের সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না। @@ surah baqara ayat 42 Al Quran 2:42 @@

বিমানবন্দরে এপিবিএন এর কাজ কি? নিরাপত্তা পাস নেই ?

বিমানবন্দরের এপিবিএন এর কাজ কি
বিমানবন্দরের এপিবিএন এর নিরাপত্তা পাশ এর মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর। এটি শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটির নিরাপত্তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিমানবন্দর সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।

এপিবিএন এর কাজ হলো বিমানবন্দর এবং তার আশেপাশের অঞ্চল নিরাপদ রাখা, অপরাধ প্রতিরোধ করা, এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি, এপিবিএন বাহিনী তাদের নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও তৎপর হয়ে উঠেছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এবং এপিবিএন এর ভূমিকা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গেটওয়ে, যা প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী, যাত্রীবাহী ফ্লাইট এবং আন্তর্জাতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এপিবিএন নিয়মিতভাবে কঠোর নজরদারি এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। তারা বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা, এয়ারসাইট (বিমানবন্দরের ভেতর), ভিআইপি সুরক্ষা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।

এপিবিএন এর সদস্যরা বিমানবন্দরটিতে নিরাপত্তা চেকপোস্ট, সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড নজরদারি, মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। সম্প্রতি, তারা বিভিন্ন অপরাধীকে আটক করেছে এবং বেশ কিছু সফল অভিযান চালিয়েছে।

নতুন নিরাপত্তা পাশের বিষয় এবং বেবিচকের সিদ্ধান্ত

এখন পর্যন্ত, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যদের জন্য নতুন নিরাপত্তা পাশ ইস্যু করেনি। বর্তমানে যে নিরাপত্তা পাশ রয়েছে তা ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কিছু অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে।   আরো দেখুন সাবেক পুলিশ আইজিপি রিমান্ডে

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যদের জন্য নতুন নিরাপত্তা পাশ ইস্যু করেনি।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এখনো এপিবিএন সদস্যদের জন্য নতুন নিরাপত্তা পাশ ইস্যু করেনি।- ছবি সংগৃহীত

এপিবিএন সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, নতুন পাস ইস্যু না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমে কোনও পরিবর্তন আসেনি। তিনি আরো বলেন,

“নতুন পাস ইস্যু করা হয়নি, এটি বেবিচকের বিষয়।”

এপিবিএন সদস্যদের জন্য নতুন পাসের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া জানিয়েছেন,

“নিয়ম অনুযায়ী পাস ইস্যু করা হবে এবং এতে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।”

এপিবিএন এর সাম্প্রতিক কার্যক্রম

এপিবিএন বাহিনী শুধু বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষাই নিশ্চিত করে না, তারা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি, এপিবিএন একাধিক সফল অভিযান পরিচালনা করেছে।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ বাহিনী সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ একাধিক চোরাকারবারীকে আটক করেছে, মানব পাচারকারী দুই চীনা নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে এবং ছিনতাইকারী চক্রকে ধরেছে। এই ধরনের পদক্ষেপগুলো নিশ্চিত করে যে বিমানবন্দর এলাকায় অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এপিবিএন পুলিশ বাহিনী তাদের সাইবার ক্রাইম সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন হারানো মোবাইল ফোন ও প্রতারণার শিকার টাকা উদ্ধার করেছে, যা তাদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে একান্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এপিবিএন এর কাজ কি?

এপিবিএন এর নিরাপত্তা কার্যক্রমের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় রয়েছে:

1. মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার: বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে মাদক চোরাচালান এবং অস্ত্র পাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
2. এয়ারপোর্ট সুরক্ষা: যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরের ভেতর এবং বাইরে পর্যবেক্ষণ রাখা।
3. জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ: বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে।
4. বিপুল পরিমাণ অপরাধী গ্রেপ্তার: এপিবিএন তাদের চৌকস নজরদারি ও কঠোর কার্যক্রমের মাধ্যমে বহু অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে।

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় সুরক্ষা সমন্বয়

এপিবিএন বাহিনী শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনা করে না, তারা অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা যেমন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), শুল্ক বিভাগ, বিভিন্ন গোয়েন্দা ইউনিট এবং বিমানবন্দর নিরাপত্তা পরিষেবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে। এই সমন্বয়ের মাধ্যমে বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়।

উপসংহার

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এপিবিএন এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এপিবিএন বাহিনীর সাম্প্রতিক কার্যক্রম, বিশেষ করে মাদক ও মানব পাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার, বিমানবন্দরের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে। তবে, নিরাপত্তা পাশের বিষয়টি দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন, যাতে বিমানবন্দর সুরক্ষায় কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি না হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!